মজবুত দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কিরাত পাঠ করতে হবে না



বর্তমানে নামধারী আহলে হাদীস ফেতনা অনেক মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্নভাবে প্রমাণ করতে চায় যে, একমাত্র তাদের ছাড়া আর কারো নামায আদায় হয় না। তাদের অনুসারী কেবল তারাই হচ্ছে যারা কোরআন এবং হাদীস সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখে না। তারা শুধু সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে আমাদের আলেম উলামাদের সাথে দলীল প্রমাণে পেরে উঠবে না ইনশাআল্লাহ।

তাই তাদের অভিযোগের জবাব দেয়ার জন্য এবং আমাদের অবুঝ ভাইদের জ্ঞাতার্থে কোরআন হাদীসের দলীল দিয়ে প্রত্যেক অভিযোগের জবাব দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।

মজবুত দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে ইমামের পিছনে মুক্তাদীর কিরাত পাঠ করতে হবে না


কোরআর থেকে দলীলঃ

মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেনঃ

وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ.

আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়। [সূরা আরাফ-২০৪]

উক্ত আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে সাহাবীগণ বর্ণনা করেছেন,

عَنْ إِبْرَاهِيمَ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: {وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنْصِتُوا، قَالَ: «فِي الصَّلَاةِ الْمَكْتُوبَةِ»

হযরত ইবরাহীম আল্লাহ তাআলার বাণী “যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা মনযোগ সহকারে শ্রবণ কর এবং চুপ থাক”। {সূরা আরাফ-২০৪} বিষয়ে বলেন, এটি ফরজ নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৮৩৭৫)

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُغَفَّلٍ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى: {وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنْصِتُوا، قَالُوا: «فِي الصَّلَاةِ»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মুগাফফাল রাঃ থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তাআলার বাণী “যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা মনযোগ সহকারে শ্রবণ কর এবং চুপ থাক”। {সূরা আরাফ-২০৪} বিষয়ে বলেন, এটি নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৮৩৭৮)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: ” كَانُوا يَتَكَلَّمُونَ فِي الصَّلَاةِ، فَنَزَلَتْ: {وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنْصِتُوا، قَالُوا: هَذَا فِي الصَّلَاةِ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ বলেন, লোকেরা নামাযের সময় কথা বলতো, তখন নাজিল হয়েছে- “যখন কুরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা মনযোগ সহকারে শ্রবণ কর এবং চুপ থাক”। {সূরা আরাফ-২০৪} সাহাবাগণ বলেন, এটি নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৮৩৮০

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ বলেছেন,
ﻭ ﺇ ﺫﺍ   ﻗﺮﺀﺍﻟﻘﺮﺍﻥ  

এটি ফরজ নামাজের ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে।
( তাফসীর ইবনে কাসীর ২য় খন্ড, ২৮ পৃঃ
তাফসীরে তাবারী ৯ ম খন্ড ১০৩ পৃঃ)

হযরত ইবনে মাসঊদ রাঃ থেকে তাফসীরে তাবারীতে বলা হয়েছে,
হযরত ইবনে মাসঊদ রাঃ নামাজ পড়ছিলেন, তখন তিনি কতিপয় লোককে ইমামের সঙ্গে কিরাত পড়তে শুনলেন। নামাজ শেষে তিনি বলেন তোমাদের কি অনুধাবন করার সময় আসেনি?  তোমাদের কি বুঝার সময় হয় নি?  যখন কুরআন পড়া হয় তখন মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং নিরব থকবে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেছেন।
(তাফসীরে তাবারী ৯ম খন্ড ১০৩ পৃঃ)

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রঃ বলেন,
এই বিষয়ে সবাই এক মত যে উক্ত আয়াত নামায সম্পর্কে নাযিল হয়েছে।
( আল মুগনী, ১ম খন্ড, ৪৯০ পৃঃ)

তাফসীরে মাদারিকে উক্ত
আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছে,

ﻭَ ﺟَﻤْﻬُﻮْﺭُ ﺍﻟﺼَّﺤَﺎﺑَﺔِ ﻋَﻠﻰ ﺃَﻧَّﻪُ ﻓِﻰ ﺍﺳْﺘِﻤَﺎﻉِ ﺍﻟْﻤُﺆﺗَﻢِّ
“অধিকাংশ সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এর অভিমত
হলো এ আয়াতটি মুক্তাদীর জন্য ইমামের
ক্বিরাআত শোনার ব্যাপারেই”।

তাফসীরে খাযেন-এ উক্ত আয়াতের
তাফসীরে এসেছে,

ﻭَ ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮْﺩٍ ﺍِﻧَّﻪُ ﺳَﻤِﻊَ ﻧَﺎﺳًﺎ ﻳَّﻘْﺮَ ﺃُﻭْﻥَ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺎِﻣَﺎﻡِ
ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺍِﻧْﺼَﺮَﻑَ ﻗَﺎﻝَ ﺍَﻣَﺎ ﺍَﻥْ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﻔْﻘَﻬُﻮْﺍ ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ
ﺍﻟْﻘُﺮْﺍﻥُ .. ﺍﻟﺦ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ কিছু
লোককে ইমামের সাথে সাথে কিরাআত
পড়তে শুনলেন। নামায শেষ হলে তিনি বললেন
এখনও কি তোমাদের উক্ত আয়াতের মমার্থ
বুঝার সময় আসেনি?

তাফসীরে ইবনে আব্বাসে উক্ত আয়াতের
তাফসীরে এসেছে,

ﻭَ ﺍِﺫَﺍ ﻗُﺮِﺉَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍﻥُ ﻓِﻰ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮْﺑَﺔِ ﻓَﺎﺳْﺘَﻤِﻌُﻮْﺍ ﻟَﻪُ
ﺍِﻟَﻰ ﻗِﺮَﺍﺀَﺗِﻪ ﻭَﺍَﻧْﺼِﺘُﻮْﺍ ﺑِﻘِﺮَﺍﺀَﺗِﻪِ
"যখন ফরয নামাযে কোরআন তিলাওয়াত
করা হয় তখন তা তোমরা কান
লাগিয়ে শোন। আর কোরআন পাঠ করার
সময় চুপ থাকো।"
হযরত আবুল আলীয়া রহঃ
তিনি বলেছেন, রাসূল সাঃ যখন নামায পড়তেন, তখন সাথে সাথে সাহাবা রাঃ ও কিরাত পড়তেন। যখন,

وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنْصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
এই আয়াত নাজিল হয়, তখন সাহাবায়ে কেরাম রাঃ চুপ থাকার ইখতিয়ার করে নেন এবং রাসুল সাঃ কিরাত পাঠ করতেন।
(কিতাবুল কিরাত লিল বায়হাকী-১/১০৭)

হযরত মুহাম্মাদ বিন কা’ব কুরজী রহঃ
তিনি বলছেন, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ রাসুল সাঃ এর পিছনে কিরাত পড়তেন, যখন কিরাত পড়তেন তখন সাথে সাথে কিরাত পড়েই যেতে থাকতেন।

এরপর এই আয়াত নাজিল হয়েছেঃ

وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنْصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

যখন কোরআন পাঠ করা হয় , তখন মনোযোগী হও এবং চুপ থাকো।
(কিতাবুল কিরাত-১১০)

হাদীস থেকে দলীলঃ

১।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ كَانَ لَهُ إِمَامٌ، فَقِرَاءَةُ الْإِمَامِ لَهُ قِرَاءَةٌ»

হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যার ইমাম রয়েছে, তার ইমামের কিরাত মানেই হল তার কিরাত।

[মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-১২৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৪৬৪৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৫০, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-১২৯৪,মুজামে ইবনুল আরাবী, হাদীস নং-১৭৫৫,সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১২৩৩,মুসন্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-২৭৯৭,মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীসনং-৩৭৬৪, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী,হাদীস নং-২৮৯৭, মুসন্নাফ ইবনে আবীশাইবা, হাদীস নং-৩৭৭৯, মুসনাদে আবীহানীফা, হাদীস নং-২৫]

২।

عن أبي وائل قال : جاء رجل إلى عبد الله فقال : يا أبا عبد الرحمن اقرأ خلف الإمام؟ فقال له عبد الله : إن في الصلاة شغلا وسيكفيك ذاك الإمام

আবু ওয়াইল রাঃ থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি আব্দুল্লাহ (ইবনে মাসউদ) রা. কে জিজ্ঞেস করল, আমি কি ইমামের পেছনে কিরাআত পাঠ করব? তিনি বললেন, নামাযে গভীর ধ্যান ও মনোযোগ দিতে হয়। ওটার জন্য ইমামই তোমার পক্ষে যথেষ্ট।

[ইবনে আবী শায়বা, হা. ৩৮০১; আব্দুর রাযযাক, হা. ২৮০৩; মুয়াত্তা মুহাম্মদ, পৃ. ৯৯]

৩।

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إذا قرأ الإمام فأنصتوا، فإذا كان عند القعدة فليكن أوّل ذكر أحدكم التشهد.

হযরত আবূ মূসা আশআরী রা. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন ইমাম কুরআন পড়বে, তোমরা তখন চুপ করে থাকবে। আর বৈঠকের সময় তাশাহহুদ-ই প্রথম পড়তে হবে।

[মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৪০৪;  আবূ দাউদ, হাদীস নং ৯৭৩;  ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৮৪৭; মুসনাদে আহমাদ, ৪খ, ৪১৫ পৃ, হাদীস নং ১৯৯৬১]

৪।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم-  إِنَّمَا جُعِلَ الإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ فَقُولُوا رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইমাম নিয়োগ করার উদ্দেশ্য তাকে অনুসরণ করা । সুত্ররাং সে যখন তাকবীর বলবে, তোমরাও তখন তাকবীর বলবে। আর যখন কুরআন পড়বে, তখন তোমরা নীরব থাকবে। যখন সে سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলবে, তখন তোমরা রাব্বানা লাকাল হামদ বলবে।

[আবূ দাউদ, হাদীস নং ৬০৪; নাসাঈ, হাদীস নং ৯২২-৯২৩; ইবনে মাজা, হাদীস নং ৮৪৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ৩৮২০; মুসনাদে আহমদ, ২খ, ৩৭৬ পৃ; দারাকুতনী, ১খ, ৩২৭পৃ]

৫।

فَقَالَ أَبُو مُوسَى أَمَا تَعْلَمُونَ كَيْفَ تَقُولُونَ فِي صَلاَتِكُمْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَنَا فَبَيَّنَ لَنَا سُنَّتَنَا وَعَلَّمَنَا صَلاَتَنَا فَقَالَ ‏"‏ إِذَا صَلَّيْتُمْ فَأَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ ثُمَّ لْيَؤُمَّكُمْ أَحَدُكُمْ فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا وَإِذَا قَالَ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ فَقُولُوا آمِينَ ‏.‏
( وَفِي حَدِيثِ جَرِيرٍ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ قَتَادَةَ مِنَ الزِّيَادَةِ ‏"‏ وَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا ‏"‏. )

হজরত আবু মুসা আশয়ারী রা: একটি দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ স: আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিয়ে সুন্নাত মোতাবেক জীবন পরিচালনার তাগিদ করলেন। নামাজের নিয়মকানুন বলে দিলেন এবং বললেন নামাজ শুরু করার পূর্বে কাতারসমূহ সোজা করে নিও। অত:পর তোমাদের একজনকে ইমাম বানিয়ে নিও। যখন তিনি তাকবীর বলেন, তখন তোমরাও তাকবীর বলো আর যখন তিনি কিরাত পড়বে তখন তোমারা চুপ থাকো আর যখন তিনি (ইমাম)

غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ

বলে, তোমরা আমীন বলো। 
(সহীহ মুসলিম-১৭৪ : হা/৪০৪)

ইমাম যখন উচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করেন তখন মুক্তাদী চুপ থাকবে

যেসব নামাযে ইমাম উচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করেন যেমন, ফজর, মাগরীব ও এশা তখন মুক্তাদী চুপ করে মনোযোগ দিয়ে কিরাত পাঠ শুনবেন মুখে কিছু পড়বেন না এমনকি সূরা ফাতিহাও পাঠ করবেন না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: أن رسول الله صلى الله عليه و سلم انصرف من صلاة جهر فيها بالقراءة فقال : هل قرأ معي منكم من أحد ؟ فقال رجل: أنا يا رسول الله قال: فقال : إني أقول ما لي أنازع القرآن ؟ فانتهى الناس عن القراءة مع رسول الله صلى الله عليه و سلم فيما جهر به من الصلاة حين سمعوا ذلك.

হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শেষ করলেন, যে নামাযে তিনি উচ্চস্বরে কেরাত পড়েছিলেন। অতঃপর বললেন, তোমাদের কেউ কি একটু পূর্বে আমার সঙ্গে কুরআন পড়েছে? তখন একজন বললেন, হ্যাঁ, আমি পড়েছি ইয়া রাসূলুল্লাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাইতো বলছি আমার সঙ্গে কুরআন নিয়ে টানাটানি হচ্ছে  কেন? লোকেরা যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা শুনলেন, সেদিন থেকে সেসব নামাযে কুরআন পড়া ছেড়ে দিলেন, যেসব নামাযে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে কুরআন পড়তেন।

[মুয়াত্তা মালেক, পৃ,২৯; তিরমিযী, হাদীস নং ৩১২, তিনি এটিকে হাসান বলেছেন। আবূ দাউদ, হাদীস নং ৮২৬; নাসায়ী, হাদীস নং ৯১৯; মুসনাদে আহমদ, ৪খ, ২৮৪পৃ; ইবনে মাজা, হাদীস নং ৮৪৮, ৮৪৯]

ইমাম যখন নিরবে কিরাত পাঠ করেন তখনও মুক্তাদী চুপ থাকবে

যেসব নামাযে ইমাম নিরবে কিরাত পাঠ করেন যেমন, যোহর, আসর তখনও চুপ করে থাকতে হবে কিছু পাঠ করা যাবে না। এমনকি সূরা ফাতিহাও পাঠ করা যাবে না।

عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ فَقَرَأَ رَجُلٌ خَلْفَهُ (سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى) فَلَمَّا صَلَّى قَالَ مَنْ قَرَأَ (سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى) . قَالَ رَجُلٌ أَنَا . قَالَ " قَدْ عَلِمْتُ أَنَّ بَعْضَكُمْ قَدْ خَالَجَنِيهَا " .

ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাঃ যোহরের নামায আদায় করলেন। এক ব্যক্তি তার পেছনে “সাব্বি হিসমা রাব্বিকাল আলা” পাঠ করল। তিনি যখন নামায শেষ করলেন, তখন বললেন, “সাব্বি হিসমা রাব্বিকাল আলা” কে পাঠ করল? এক ব্যক্তি বলল, আমি পড়েছি। তখন তিনি বললেন, আমি জানতাম, তোমাদের কেউ কিরাআতে আমার সাথে ঝামেলা সৃষ্টি করবে।

[নাসাঈ শরীফঃ হাঃ ৯২০]

ﻋﺒﺪﺍﻟﺮﺯﺍﻕ ﻋﻦ ﺍﻟﺜﻮﺭﻯ ﻋﻦ ﻣﻮﺳﻰ ﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺷﺪﺍﺩ ﺑﻦ ﺍﻟﻬﺎﺩ ﺍﻟﻠﻴﺜﻰ ﻗﺎﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻟﻈﻬﺮ ﺍﻭ ﺍﻟﻌﺼﺮ ﻓﺠﻌﻞ ﺭﺟﻞ ﻳﻘﺮﺃ ﺧﻠﻒ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺭﺟﻞ ﻳﻨﻬﻰ ﻓﻠﻤﺎ ﺻﻠﻰ ﻗﺎﻝ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻨﺖ ﺍﻗﺮﺃ ﻭﻛﺎﻥ ﻫﺬﺍ ﻳﻨﻬﺎﻧﻰ ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻦ ﻛﺎﻥ ﻟﻪ ﺍﻣﺎﻡ ﻓﺎﻥ ﻗﺮﺍﺋﺔ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻟﻪ ﻗﺮﺍﺋﺔ

আব্দুল্ললাহ ইবনে শাদ্দাদ ইবনুল হাদ বলেন, রাসূল সাঃ যোহর অথবা আছরের নামায পড়লেন। এক ব্যক্তি নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছনে কুরআন পড়ছিল। আরেকজন তাকে নিষেধ করছিল। অতঃপর যখন নামায শেষ করলেন তখন সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কুরআন পড়ছিলাম আর এ ব্যক্তি আমাকে নিষেধ করছিল। তখন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, যার ইমাম আছে, ইমামের কুরআন পাঠই তার কুরআন পাঠ
(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং- ২৭৯৭)

সাহাবীগণের অভিমতঃ

أَنَّهُ سَأَلَ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ عَنِ الْقِرَاءَةِ مَعَ الإِمَامِ فَقَالَ لاَ قِرَاءَةَ مَعَ الإِمَامِ فِى شَىْءٍ .

আতা ইবনে ইয়াসার র. বলেছেন, তিনি ইমামের সঙ্গে কুরআন পড়া সম্পর্কে যায়দ ইবনে ছাবিত রা.কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি জবাব দিলেন, কোন নামাযেই ইমামের সঙ্গে কোন কিছু পড়বে না।

[মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৫৭৭, নাসাঈ শরীফ  ৯৬০, আবু আওয়ানা ১৯৫১, বায়হাকী ২৯১১]

أن عبد الله بن عمر كان إذا سئل هل يقرأ أحد خلف الإمام قال إذا صلى أحدكم خلف الإمام فحسبه قراءة الإمام وإذا صلى وحده فليقرأ قال وكان عبد الله بن عمر لا يقرأ خلف الإمام.

নাফে র. থেকে বর্ণিত, হযরত ইবনে উমর রা.কে যখন জিজ্ঞেস করা হতো, ইমামের পেছনে কেউ কুরআন পড়বে কিনা? তিনি বলতেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পেছনে নামায পড়ে তখন ইমামের পড়াই তার জন্য যথেষ্ট। আর যখন একাকী পড়ে, তখন যেন নিজেই কেরাত পড়ে। নাফে বলেন, ইবনে উমর রা. ইমামের পেছনে  কুরআন পড়তেন না।

[মুয়াত্তা মালেক, পৃ ২৯, ৪৩, আব্দুর রাযযাক ২৮১৪, মুসনাদে ইবনুল জাদ ১১৫০, তাহাবী ১৩১২, ১৩১৭ দারাকুতনী ১৫০৩, বায়হাকী ২৯০১, ২৯০৩]

উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ বলেন,

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻦ ﻋﻠﻴﺔ ﻋﻦ ﺍﻳﻮﺏ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﻭﺍﻧﺲ ﺑﻦ ﺳﺮﻳﻦ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﺨﻄﺎﺏ ﺗﻜﻔﻴﻚ ﻗﺮﺍﺋﺔ ﺍﻻﻣﺎﻡ

ইমামের কুরআন পাঠ তোমার জন্য যথেষ্ঠ।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ১/৪১২)

আলী ইবনে আবি তালিব রাঃ বলেন,

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ ﺍﻻﺻﺒﻬﺎﻧﻰ ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﻟﻴﻠﻰ ﻋﻦ ﻋﻠﻰ ﻗﺎﻝ ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺧﻠﻒ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﻘﺪ ﺍﺧﻄﺄ ﺍﻟﻔﺘﺮﺓ

যে ব্যক্তি ইমামের পিছনে কুরআন পাঠ করল সে নিয়ম লঙ্ঘন করল
(ইবনে আবি শায়বা : ১/৪১২)

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন,

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻮ ﺑﻜﺮﺓ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻮ ﻧﻌﻴﻢ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺧﺪﻳﺞ ﺑﻦ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﻋﻦ ﺍﺑﻰ ﺍﺳﺤﺎﻕ ﻋﻦ ﻋﻠﻘﻤﺔ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻗﺎﻝ ﻟﻴﺖ ﺍﻟﺬﻯ ﻳﻘﺮﺃ ﺧﻠﻒ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻣﻠﺊ ﻓﻮﻩ ﺗﺮﺍﺑﺎ

যে ব্যক্তি ইমামের পিছনে কুরআন পাঠ করে তার মুখ যদি মাটি দ্বারা পূর্ণ করে দেয়া হত!
(শরহু মাআ’নিল আছার : ১/১৬০)

ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন,

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻦ ﺍﺑﻰ ﺩﺍﻭﺩ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﺑﻮ ﺻﺎﻟﺢ ﺍﻟﺤﺮﺍﻧﻰ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ
ﺣﻤﺎﺩ ﺑﻦ ﺳﻠﻤﺔ ﻋﻦ ﺍﺑﻰ ﺟﻤﺮﺓ ﻗﺎﻝ ﻗﻠﺖ ﻻﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺍﻗﺮﺃ
ﻭﺍﻻﻣﺎﻡ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻯ ﻗﺎﻝ ﻻ

আবু জামরা বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রা.) কে জিজ্ঞেস করলাম, ইমাম আমার সামনে থাকা অবস্থায়ও কি আমি কুরআন পাঠ করব ?
জবাবে তিনি বলেন না। (পাঠ করবে না)
(শরহু মাআ’নিল আছার : ১/১৬০)

ইবনে উমর রাঃ বলেন,

ﻣﺎﻟﻚ ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﺍﻥ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻛﺎﻥ ﺍﺫﺍ ﺳﺌﻞ ﻫﻞ ﻳﻘﺮﺃ ﺍﺣﺪ ﺧﻠﻒ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻗﺎﻝ ﺍﺫﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﺣﺪﻛﻢ ﺧﻠﻒ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﺤﺒﺴﻪ ﻗﺮﺍﺋﺔ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻭﺍﺫﺍ ﺻﻠﻰ ﻭﺣﺪﻩ ﻓﻠﻴﻘﺮﺃ ﻗﺎﻝ ﻭﻛﺎﻥ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻻ ﻳﻘﺮﺃ ﺧﻠﻒ ﺍﻻﻣﺎﻡ

হযরত নাফে’ বলেন, ইবনে উমর (রা.) কে যখন জিজ্ঞেস করা হল, কেউ কি ইমামের পিছনে কুরআন পাঠ করবে ? জবাবে তিনি বলেন, কেউ ইমামের পিছনে নামায পড়লে তার জন্য ইমামের কুরআন পাঠই যথেষ্ঠ। আর একাকী পড়লে কুরআন পাঠ করবে। ইবনে উমর নিজেও ইমামের পিছনে কুরআন পাঠ করতেন না
(মুয়াত্তা ইমাম মালেক : ২৯)

যায়েদ ইবনে ছাবেত রাঃ বলেন,

ﻋﻦ ﻋﻄﺎﺀ ﺑﻦ ﻳﺴﺎﺭ ﺍﻧﻪ ﺍﺧﺒﺮﻩ ﺍﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﺯﻳﺪ ﺑﻦ ﺛﺎﺑﺖ ﻋﻦ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﻣﻊ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﻓﻘﺎﻝ ﻻ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﻣﻊ ﺍﻻﻣﺎﻡ

ইমামের সঙ্গে কোন কুরআন পাঠ নেই।
(মুসলিম : ১/২১৫)

যারা বলেন ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পাঠ না করলে নামায হবে না তাদের জবাব


সূরা ফাতিহা পাঠ না করলে নামায হবে না এই কথা আমরাও বলি। তবে তা ইমামের জন্য, একাকী নামায আদায়কারীর জন্য এবং ঐ ব্যক্তির জন্য যিনি মাসবূক। মাসবূক হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার ইমামের পিছনে কিছু রাকাআত ছুটে গেছে। ইমাম উভয় দিকে সালাম ফেরানোর পর তিনি দাঁড়িয়ে উক্ত রাকাআত আদায়ের সময় অবশ্যই সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন।

বিরুদ্ধবাদীদের দলীলঃ

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﻠﻰ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﻟﺰﻫﺮﻯ ﻋﻦ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﺑﻦ ﺍﻟﺮﺑﻴﻊ ﻋﻦ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺑﻦ ﺍﻟﺼﺎﻣﺖ ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺻﻠﻮﺓ ﻟﻤﻦ ﻟﻢ ﻳﻘﺮﺃ ﺑﻔﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ

হযরত উবাদা বিন ছামেত (রা.) হতে বর্ণিত রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি ছূরা ফাতিহা পড়ল না তার নামায হল না
(বুখারী : ১/১০৪)।

উক্ত হাদীস সম্পর্কে আমাদের দলীলঃ

সুফিয়ান বিন উয়াইনার উক্তি

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻗﺘﻴﺒﺔ ﺑﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﻭﺍﺑﻦ ﺍﻟﺴﺮﺡ ﻗﺎﻻ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﻋﻦ ﺍﻟﺰﻫﺮﻯ ﻋﻦ ﻣﺤﻤﻮﺩ ﺑﻦ ﺍﻟﺮﺑﻴﻊ ﻋﻦ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺑﻦ ﺍﻟﺼﺎﻣﺖ ﻳﺒﻠﻎ ﺑﻪ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺻﻠﻮﺓ ﻟﻤﻦ ﻟﻢ ﻳﻘﺮﺃ ﺑﻔﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻓﺼﺎﻋﺪﺍ ﻗﺎﻝ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﻟﻤﻦ ﻳﺼﻠﻰ ﻭﺣﺪﻩ

হযরত উবাদা বিন ছামেত (রা.) হতে বর্ণিত উক্ত হাদীসটি (যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়ল না তার নামায হল না) বর্ণনা করার পরে হযরত সুফিয়ান বিন উয়াইনা (র.) বলেন, এটা ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে একাকী নামায আদায় করে (আবু দাউদ : ১/১১৯)।

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের উক্তি

ﻭﺍﻣﺎﺍﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﻌﻨﻰ ﻗﻮﻝ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻻ ﺻﻠﻮﺓ ﻟﻤﻦ ﻟﻢ ﻳﻘﺮﺃ ﺑﻔﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﺍﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻭﺣﺪﻩ

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রঃ বলেন, ‘যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়ল না তার নামায হল না’ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ হাদীসটি ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে ব্যক্তি একাকী নামায পড়ে
(তিরমিযী : ১/৭১)।

من صلى ركعة لم يقرأ فيها بأم القرآن فلم يصل إلا أن يكون وراء الإمام.

হযরত জাবির রা. বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাযের কোন রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়ল না, সে যেন নামাযই পড়ল না। তবে যদি সে ইমামের পেছনে নামায পড়ে।  (তাহলে তার ব্যাপার ভিন্ন।)

[তিরমিযী, হাদীস নং ৩১৩; তিনি এ হাদীসকে সহীহ বলেছেন। মুয়াত্তা মালেক, পৃ ২৮, নং ৩৮; মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ২৭৪৫ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৩৬২১, আল কিরাআতু খালফাল ইমাম লিল বুখারী ১৭৪, নাসাঈ কুবরা ২৮৯৯,  শারহু মুশকিলিল আছার ১৩০১, বায়হাকী ১২৪২, মারিফাতুস সুনান ওয়াল আছার ৩২০৩ আল কিরাআতু খালফাল ইমাম লিল বায়হাকী ৩৫৮]

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺑﺤﺮ ﺑﻦ ﻧﺼﺮ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻳﺤﻰ ﺑﻦ ﺳﻼﻡ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻣﺎﻟﻚ ﻋﻦ ﻭﻫﺐ ﺑﻦ ﻛﻴﺴﺎﻥ ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻧﻪ ﻗﺎﻝ ﻣﻦ ﺻﻠﻰ ﺭﻛﻌﺔ ﻓﻠﻢ ﻳﻘﺮﺃ ﻓﻴﻬﺎ ﺑﺄﻡ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﻓﻠﻢ ﻳﺼﻞ ﺍﻻ ﻭﺭﺍﺀ ﺍﻹﻣﺎﻡ

হযরত জাবের (রা.) হতে বর্ণিত রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি এক রাকাত নামাযও পড়ল অথচ তাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করল না সে নামাযই পড়ল না; তবে ইমামের পিছনে থাকলে ভিন্ন কথা।
(শরহু মাআ’নিল আছার : ১/১৫৯)



পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
No Comment
Add Comment
comment url